জুতা তো পরতেই হয়। শীতকালে তা আরও জরুরি। ঠান্ডা থেকে
পা সুরক্ষিত রাখতে পারে জুতা ও মোজা। অনেকেই নিজের ব্যক্তিত্ব ও আভিজাত্য
প্রকাশের জন্য জুতা ব্যবহার করে থাকেন। মূলত ধুলাবালি, ময়লা এবং রোগজীবাণু
থেকে পায়ের সার্বক্ষণিক রক্ষা পাওয়ার জন্য জুতার ব্যবহার। রুচি, পছন্দ,
প্রয়োজন ও মৌসুমের সঙ্গে পরিবর্তিত হয় জুতার ব্যবহার। তবে জুতা–মোজা
ব্যবহারের পর সেসবে দুর্গন্ধ হয় অনেক ক্ষেত্রেই। আর তা থেকে যায় পায়েও।
শুধু রুচিসম্মত আধুনিক জুতা ও মোজা পায়ে জড়ালেই চলবে না,
সচেতন থাকতে হবে পা থেকে ছড়িয়ে পড়া দুর্গন্ধের হাত থেকে বাঁচতেও। অনেক
জায়গায় জুতা খুলে প্রবেশ করতে হয়। দুর্গন্ধ হলে তখন মুখোমুখি হতে হয়
বিব্রতকর এক পরিস্থিতির।
মোজা ব্যবহারের ফলে পায়ে দুর্গন্ধ হতেই পারে। আবার যাঁরা
মোজা ছাড়া জুতা পরেন, তাঁরাও এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন। ঢাকা
মেডিকেল কলেজের চর্ম ও যৌনরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম বখতিয়ার কামাল
জানিয়েছেন, সাধারণত যাঁদের পা ঘামার প্রবণতা থাকে, দুর্গন্ধ ছড়ায় তাঁদের পা
থেকে। ঘামে ভেজা স্যাঁতসেঁতে পায়ে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার দ্রুত হয়। সময়
বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে দুর্গন্ধও। মোজা পরার আগে
অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল পাউডার লাগিয়ে নিতে পারেন। বাড়ি ফিরে লবণ মেশানো
কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে রাখতে পারেন। স্ক্র্যাব করে মৃত কোষগুলো সরিয়ে
ফেললেও দুর্গন্ধ কমবে। এক জোড়া জুতা প্রতিদিন না পরে জুতা বদল করে পরলেও
কিছুটা সমাধান মিলতে পারে। মোজা সাবানপানিতে ধুয়ে ফেলার পর কড়া রোদে শুকিয়ে
নেওয়া উচিত। জুতা বদ্ধ জায়গায় না রেখে আলো ও বাতাস চলাচল করে এমন স্থানে
রাখা উচিত। দীর্ঘ সময় জুতা বা মোজা পরে না থেকে মাঝেমধ্যে জুতা খুলে পায়ের
পাতায় বাতাস লাগালে দুর্গন্ধ হওয়ার শঙ্কা কমবে। যাঁদের অনেকক্ষণ জুতা পায়ে
দিয়ে থাকতে হয়, তাঁদের ফিতা আলগা করে বেঁধে রাখা উচিত, যাতে সুযোগ পেলেই
খুলে ফেলা যায় ও দ্রুত পায়ে ঢুকিয়ে নেওয়া যায়। আজকাল বাজারে পায়ের দুর্গন্ধ
এড়ানোর সুগন্ধি পাওয়া যায়। সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন। পায়ের প্রতি
যত্নবান হলে দুর্গন্ধ সহজেই এড়ানো যায়।
এ তো গেল ডাক্তারি মত। এসব ছাড়াও কিছু আদবকেতা আছে পা জড়িয়ে। সেসব জানা থাকাটাও জরুরি।
বয়স্ক ব্যক্তির সামনে পায়ের ওপর পা তুলে বসে থাকা খুবই
অশোভন আচরণ। এমন ক্ষেত্রে উঠে গিয়ে বয়স্ক ব্যক্তিদের বসতে দেওয়া ও পা
নামিয়ে বসাটাই সবার শোভনীয় আচরণ।
সোফায়, খাটে, টুলে বা মাঠে যেখানেই বসুন না কেন, পা লম্বা করে ছড়িয়ে রাখা উচিত নয়।
মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় অথবা অন্য কারও সঙ্গে কথা বলার
সময় চলাচলের পথে দাঁড়িয়েই কিংবা হাঁটাহাঁটি করে কথা বলতে থাকা মোটেই উচিত
নয়। কেননা, এতে অন্যদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতে ও মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটে।
জুতা খোলার পর দুর্গন্ধ ছড়ালে চেষ্টা করুন যত দ্রুত সম্ভব
সাবানপানিতে ভালো করে পা ধুয়ে ফেলতে। সুগন্ধি লাগালেও ফুরফুরে অনুভূতি
আসবে।
অনিচ্ছাকৃতভাবে অন্যের পা মাড়িয়ে দিলে অথবা পায়ে পা লেগে গেলে আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করতে ভুলবেন না।
সব সময় পরিষ্কার মোজা পরা উচিত। ত্বক সংবেদনশীল হলে মোজা এক দিনের বেশি না পরাই ভালো।
চেষ্টা করতে হবে প্যান্টের রঙের মতো অথবা তার থেকে কিছুটা
গাঢ় রঙের মোজা বেছে নিতে। মোজায় যদি নকশা করা থাকে, তাহলে চেষ্টা করতে
হবে যেন মোজার প্রধান রংটি প্যান্টের রঙের কাছাকাছি হয়।
সম্ভব হলে বাইরে থেকে ফিরে মোজা বাতাসে শুকিয়ে নিতে হবে।
যাঁদের পা বেশি ঘামে, মোজা ব্যবহারের আগে ফুট পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সিনথেটিক মোজা পায়ে দুর্গন্ধ বাড়ায়। তাই সুতি মোজা পায়ে দিলে কমবে দুর্গন্ধ।
সূত্র: প্রথম আলো অনলাইন...
Tags
জীবনযাপন